Wednesday, November 22, 2023

লোকমান হাকিম কে? যে কারণে তিনি বিখ্যাত

লোকমান হাকিম। তার জ্ঞান-প্রজ্ঞার পরিচিতি-প্রসিদ্ধি জাহানজুড়ে। তাকে বিশেষ জ্ঞান ও প্রজ্ঞা দান করা হয়েছিল, যেমন খিজির আলাইহিস সালামকে দেওয়া হয়েছিল। আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং তার কথাকে কোরআনে মানুষের নসিহত হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তার নামে পবিত্র কোরআনে একটি সুরা অবতীর্ণ হয়েছে। নিজের ছেলেকে দেওয়া তার উপদেশবাণী বিশ্বখ্যাত। সকলের কাছে হাকিম হিসেবে পরিচিত ছিলেন হজরত লোকমান (আ.)। হাকিম মানে হচ্ছে যার থেকে প্রজ্ঞাপূর্ণ কথা বের হয়। তার কথা ছিল অর্থবহ। মানুষের মাঝে এর প্রভাব ছিল ব্যাপক। এখনো তার কথাকে বাণী হিসেবে লিখে রাখা হয়। হজরত লোকমান আ. পেশাগত দিক থেকে ছিলেন একজন কাঠমিস্ত্রি ছিলেন। জাবির (রা.) তার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, তিনি বেঁটে, চেপ্টা নাকবিশিষ্ট। আবার ইমাম মুজাহিদ (রহ.) বলেন, তিনি ফাটা পা ও পুরো ঠোঁটবিশিষ্ট ছিলেন। লোকমান আ. সামান্য আয়ের মানুষ হলেও তিনি কখনো অর্থের জন্য অনৈতিক কাজে জড়াননি। সৎভাবে অর্জিত অর্থ দিয়েই তিনি জীবন চালাতেন। হজরত ওয়াহাব ইবনু মুনাব্বেহ (রহ.) এর মতে, লোকমান (আ.) আইয়ুবের (আ.) ভাগ্নে ছিলেন। তিনি দীর্ঘ জীবন পেয়েছিলেন। ইমাম বায়জাবি (রহ.), অন্য মতানুসারে তিনি দাউদ (আ.)-এর সময়ও জীবিত ছিলেন। ইবনু আব্বাস (রা.)-এর বর্ণনায় আছে, লোকমান (আ.) আবিসিনীয় ক্রীতদাস। লোকমান হাকিম নবী ছিলেন কিনা সে ব্যাপারে মতানৈক্য রয়েছে। ইবনু আববাস (রা.), জাবের ইবনু আব্দুল্লাহ (রা.) এবং সাঈদ ইবনুল মুসাইয়িব রা. এর বর্ণনা উদ্ধৃত করে সুফিয়ান সাওরি রহ. তিনি নবী নন, বরং আল্লাহর একজন সৎ বান্দা ছিলেন। ইমাম বাগবি (রহ.) বলেন, এ কথা সর্বসম্মত, তিনি নবী নন; বরং ফকিহ ও প্রাজ্ঞজন। -(মাজহারি, ইবনে কাছীর, তাফসীর সূরা লোকমান ৩১/১২ আয়াত)। সাহাবি কাতাদা (রা.)-কে উদ্ধৃত করে হজরত ইবনু কাসির (রহ.) বলেন, মহান আল্লাহ লোকমান (আ.)-কে ‘নবুয়ত’ ও ‘হিকমাতে’র (প্রজ্ঞা) মধ্যে একটি গ্রহণের অবকাশ দেন। তখন তিনি হিকমত (প্রজ্ঞা) গ্রহণ করেন। কেউ একজন তাকে নবুয়ত গ্রহণ না করার কারণ জিজ্ঞাস করলে তিনি বলেন, ‘যদি আমাকে নবুওয়াত দেয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হত; তাহলে আমি তা গ্রহণ করলে আল্লাহর সাহায্য পেয়ে তাতে সফল হতাম। কিন্তু তা চূড়ান্ত না করে ঐচ্ছিক রাখা হয়েছে, যে কারণে এ দায়িত্ব পালনের ব্যাপারে আমি শঙ্কিত ছিলাম। তাই আমি হেকমতকে অগ্রাধিকার দিয়ে তা গ্রহণ করেছি।’ কোনো কোনো বর্ণনায় পাওয়া যায় যে, লোকমান হাকিম বলেছেন, যে গুণগুলোর কারণে আল্লাহ তায়ালা আমাকে এত ওপরে উঠিয়েছেন, কোনো ব্যক্তি যদি সেগুলো অর্জন করতে পারেন তাহলে সেও আমার মতো মর্যাদার আসনে সমাসিন হতে পারবেন। সে গুণগুলো হচ্ছে, নিজের দৃষ্টিকে নিচের দিকে রাখা, জবানকে বন্ধ রাখা তথা চুপ থাকা, হালাল আয়ের ওপর সন্তুষ্ট থাকা, লজ্জাস্থানের হেফাজত করা, সত্য কথা বলা, অঙ্গিকার পূর্ণ করা, মেহমানের ইজ্জত করা, প্রতিবেশিকে কষ্ট না দেয়া, অনর্থক কথা ও কাজ পরিহার করা। জানা গেছে, লোকমান হাকিমকে একলোক এসে বলে, তুমি ওই ব্যক্তি না, যে আমার সঙ্গে মাঠে ছাগল চড়িয়েছ? আচ্ছ বলো তো, তুমি এত বড় হলে কীভাবে, লোকজন দূরদূরান্ত থেকে তোমার কথা শুনার জন্য আসে এবং তোমার এত বড়বড় মজলিস বসে? উত্তরে তিনি দুটি গুণের কথা বলেন। দুটি গুণের কারণেই আল্লাহ তায়ালা তাকে এত বড় করেছেন। (এক) সদা সত্য কথা বলা। (দুই) অনর্থক কথা বলা থেকে বিরত থাকা। সাহাবি আবু দারদা (রা.) এর বর্ণনায় এসেছে, তিনি ছিলেন নিরবতা অবলম্বণকারী, সর্বদা চিন্তায় নিমগ্ন ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন একজন ব্যক্তি। দিনে কখনো ঘুমাতেন না। কেউ তাকে থুথু ফেলা, নাক পরিস্কার ইত্যাদি মানবীয় কাজ করতে দেখেননি (অর্থাৎ এগুলো তিনি নিরবে সেরে ফেলতেন)। (ইবনে কাসির)

দ্বীনদার জীবনসঙ্গী পাওয়ার দোয়া || দ্বীনদার জীবনসঙ্গী কেমন হওয়া উচিত বিস্তারিত জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন । ভিডিও টি ভালো লাগলে শেয়ার করে নেকী অর্জন করুন। ধন্যবাদ

https://youtu.be/upOx_EJfJxs 


আসসালামু আলাইকুম। আশা করি আপনারা সকলেই ভালো আছেন। আমাদের আজকের এই ভিডিও তে জানতে পারবেন আল-আকসা মসজিদের জানা-অজানা ইতিহাস সম্পর্কে। তাই দেরি না করে সম্পূর্ণ ভিডিও শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখুন ইনশাআল্লাহ উপকৃত হবেন। 

পৃথিবীর বরকতময় ও স্মৃতিবিজড়িত ফিলিস্তিনের সুন্দর সুশোভিত প্রাচীনতম জেরুজালেম শহরে অবস্থিত মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্রতম মসজিদ আল-আকসা। মুসলিম জাতির প্রথম কিবলা ও পৃথিবীর বুকে সব জাতি-বর্ণের মুসলমানদের প্রাণস্পন্দন। অন্যদের মাধ্যমে দখল করা যেকোনো মুসলিম ভূখণ্ড উদ্ধার করা সমগ্র মুসলমানের দায়িত্ব। তবে ইসলামের প্রথম কিবলার দেশ ফিলিস্তিনের বিষয়টি অন্য সবগুলোর চেয়েও ভিন্ন এবং গুরুত্বপূর্ণ। আর জেরুজালেমের এই স্থানটিকেই নিজেদের পবিত্র স্থান হিসেবে দাবি করে আসছে ইহুদি এবং খ্রিস্টানরাও।
সৌদি আরবের মক্কার মসজিদুল হারাম এবং মদিনার মসজিদে নববীর পরই, মুসলমানদের কাছে পবিত্র স্থান জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ। খ্রিস্টপূর্ব এক হাজার চারশত সালে মসজিদটি পুনর্নির্মাণ করেন হজরত সোলায়মান আলাহিসসালাম । এরপর বিভিন্ন সময়ই এর সংস্কার করা হয়। দুটি বড় ও দশটি ছোট গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটিতে প্রকাশ পেয়েছে নির্মাণশৈলীর এক মনোমুগ্ধকর প্রতিচ্ছবি। বিভিন্ন সময়ে মসজিদটি সংস্কারে ব্যবহার করা হয় মার্বেল, সোনাসহ নানা ধরনের মূল্যবান ধাতু ও পাথর। ঐতিহাসিকভাবেই আল-আকসা মসজিদ মুসলমানদের পবিত্র স্থান। তার পরও এটিকে পবিত্র স্থান হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে ইউনেস্কো।
উনিশত আআটচল্লিশ সালে ফিলিস্তিনি ভূমি অবৈধভাবে দখলের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় ইহুদিরাষ্ট্র ইসরায়েল। তারই ধারাবাহিকতায় উনিশত সাতষট্টি সালে আরবদের সঙ্গে যুদ্ধে, আল-আকসা মসজিদ দখল করে নেয় দেশটি। এরপর থেকেই এটি নিয়ন্ত্রণ করে আসছে দখলদার ইসরায়েল। আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর আল-আকসা পুরোপুরি বন্ধ থাকে। এমনকি উনিশত উনসত্তর সালে পবিত্র মসজিটিতে অগ্নিসংযোগও করা হয়। এরপর নানা বিধিনিষেধ আর শর্তসাপেক্ষে সেখানে ইবাদতের সুযোগ পেতেন সাধারণ মুসল্লিরা। পরে আবারও বিভিন্ন অজুহাতে ইসরায়েলি বাহিনী আল-আকসা মসজিদ ফিলিস্তিনিদের জন্য বন্ধ করে দেয়। দুটা হাজার তিন সালে জেরুজালেমে অবৈধ বসতি স্থাপনকারী ইহুদিদের আল-আকসায় প্রবেশের অনুমতি দেয় ইসরায়েল। সংকট আরো ঘনীভূত হয়। বিভিন্ন সময় ইহুদিরা মসজিদের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে মুসল্লিদের ওপর হামলা চালায়।
ইহুদিদের কাছে এই স্থানটি টেম্পল মাউন্ট হিসেবে পরিচিত। তাদের দাবি, এর নিচেই রয়েছে তাদের দুটি প্রাচীন মন্দির। অন্যদিকে খ্রিস্টানরাও আল-আকসা মসজিদের স্থাপনাকে তাদের পবিত্র স্থান হিসেবে দাবি করে আসছে। মসজিদ আল-আকসাসহ অসংখ্য নবী-রাসুলের স্মৃতি বিজড়িত যার চত্বরে আজও অসংখ্য নবী-রাসুলের সমাধি বিদ্যমান। মসজিদে আকসার প্রতিষ্ঠার ইতিহাস অনেকেরই অজানা। বায়তুল মুকাদ্দাসের প্রতিষ্ঠা হয় মুসলিম জাতির বাবা হজরত ইবরাহিম আলাইহিসসালাম কর্তৃক পবিত্র কাবা নির্মাণের চল্লিশ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর। তার নাতি বনি ইসরায়েলের প্রথম নবী হজরত ইয়াকুব আলাহিসালাম ঐতিহাসিক প্রসিদ্ধ শহর জেরুজালেমে মসজিদ আল-আকসা নির্মাণ করেন। অতঃপর হজরত সুলায়মান আলাইহিসসালাম এ পবিত্র মসজিদ পুনর্নির্মাণ করেন। ইসলামের আগমনের পর প্রিয় নবী হজরত মোহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ইন্তেকালের কয়েক বছর পর ছয়শত আটচল্লিশ  খ্রিস্টাব্দে মুসলমানদের অধীনে আসে। ইসলামের প্রথম দিকে এ মসজিদটি কিছু দিনের জন্য মুসলমানদের কেবলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল।
পনেরো জুলাই এলো হাক সাল। ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য এক বেদনাদায়ক দিন। সে দিন অযোগ্য মুসলিম শাসকদের ছত্রছায়ায় খ্রিস্টান ক্রুসেডার বাহিনী সমগ্র সিরিয়া ও ফিলিস্তিন দখল করে। এরপরই ঘটতে থাকে হৃদয়বিদারক অসংখ্য ঘটনা। যা ইসলাম ও মুসলমানদের জন্য বড়ই বেদনাদায়ক। খ্রিস্টানরা এক হাজার নিরানব্বই সালের সাত জুন প্রথমে জেরুজালেমে অবস্থিত ‘বায়তুল মুকাদ্দাস তথা মসজিদ আল-আকসা’ অবরোধ করে এবং পনেরো জুলাই মসজিদের ভেতর প্রবেশ করে ব্যাপক পরিবর্তন করে। অতঃপর এ পবিত্র মসজিদে তারা তাদের উপাসনালয় গির্জায় পরিণত করে। বায়তুল মুকাদ্দাস পুনরুদ্ধার তেইস মার্চ খ্রিস্টাব্দে। ফাতেমীয় খেলাফতের রাজত্বকালে খলিফার নির্দেশে সেনাপতি হজরত সালাহউদ্দিন আইয়ুবি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি গভর্নর ও সেনাপ্রধান হয়ে মিসরে আগমন করেন। বিশ সেপ্টেম্বর এগারো শত সাতাশি খ্রিস্টাব্দে রক্তক্ষয়ী সমরাভিযানের মাধ্যমে তিনি মসজিদ আল-আকসাসহ পুরো ঐতিহাসিক জেরুজালেম নগরী মুসলমানদের অধিকারে নিয়ে আসেন।
দুই অক্টোবর এগারোশত সাতাশি খ্রিস্টাব্দে সেনাপতি ও গভর্নর সুলতান সালাহউদ্দিন আইয়ুবি আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ীবেশে বায়তুল মুকাদ্দাসে প্রবেশ করেন। সালাহউদ্দিন আইয়ুবি কর্তৃক বায়তুল মুকাদ্দাস মুক্ত হওয়ার পর জেরুজালেমে দীর্ঘ প্রায় এক শতাব্দিব্যাপী মুসলমানরা খ্রিস্টানদের অত্যাচার থেকে মুক্ত ছিল। বর্তমানে ‘আল-আকসা’ মসজিদ বলতে বোঝায় কিবলি মসজিদ, মারওয়ানি মসজিদ ও বুরাক মসজিদ- এ তিনটির সমন্বয়; যা ‘হারাম আশ শরিফ’ এর চার দেয়ালের মধ্যেই অবস্থিত। ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহূ বর্তমান মসজিদের স্থানে একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে উমাইয়া খলিফা আবদুল মালিকের যুগে মসজিদটি পুনর্নির্মিত ও সম্প্রসারিত হয়। এই সংস্কার সাতশত পাচ খ্রিস্টাব্দে তার ছেলে খলিফা প্রথম আল ওয়ালিদের শাসনামলে শেষ হয়। সাতশত পাচ খ্রিস্টাব্দে ভূমিকম্পে মসজিদটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হলে আব্বাসীয় খলিফা আল মনসুর এটি পুনর্নির্মাণ করেন। পরে তার উত্তরসূরি আল মাহদি এর পুনর্নির্মাণ করেন। এক হাজার তেতত্রিশ খ্রিস্টাব্দে আরেকটি ভূমিকম্পে মসজিদটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে ফাতেমীয় খলিফা আলি জাহির পুনরায় মসজিদটি নির্মাণ করেন যা বর্তমান অবধি টিকে রয়েছে।
বিভিন্ন শাসকের সময় মসজিদটিতে অতিরিক্ত অংশ যোগ করা হয়। এরমধ্যে রয়েছে গম্বুজ, আঙিনা, মিম্বর, মিহরাব, অভ্যন্তরীণ কাঠামো। বর্তমানে জেরুজালেম দখলদার ইসরায়েলিদের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও মসজিদটি রয়েছে জর্ডানি/ফিলিস্তিনি নেতৃত্বাধীন ইসলামি ওয়াকফের তত্ত্বাবধানে। ঐতিহাসিক এ স্থানের সঙ্গে জড়িয়ে মুসলমানদের নানা স্মৃতি। এখানেই শুয়ে আছেন হজরত ইবরাহিম এবং মুসা আলাইসসালাম সহ অসংখ্য নবী ও রাসুল। এখানেই মহানবী হজরত মোহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সব নবী-রাসুল এবং ফেরেস্তাদের নিয়ে নামাজ পড়েছিলেন। সেই জামাতের ইমাম ছিলেন মহানবী হজরত মোহাম্মদ সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  নিজেই। এখান থেকেই হজরত মোহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম  বোরাকে করে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার উদ্দেশে যাত্রা করছিলেন। এই মসজিদ নির্মাণের সঙ্গে জড়িয়ে আছে হজরত আদম আলাইহিসসালাম, হজরত সুলাইমান আলাইহিসসালাম এর নাম। জড়িয়ে আছে প্রায় অর্ধ জাহানের শাসক হজরত উমর রাদিউললাহ , দ্য গ্রেট সুলতান সালাউদ্দিন আইয়ুবিসহ অসংখ্য বীরের নাম। এই মসজিদে দুই রাকাত নামাজ আদায় করলে একজনের আমলনামায় পাচশত রাকাত নামাজের সমপরিমাণ সওয়াব লিখা হয়। পবিত্র কোরআনের প্রায় সত্তুর জায়গায় উচ্চারিত হয়েছে এ মসজিদের কথা।
প্রথম নির্মাণ খ্রিস্টপূর্ব নয়শত সাতান্ন সালে, মসজিদুল আকসা অর্থ ‘দূরবর্তী মসজিদ’। মিরাজের রাতে হজরত রাসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বোরাকে চড়ে মক্কা থেকে এখানে এসেছিলেন। অনেক বছর ধরে মসজিদুল আকসা বলতে পুরো এলাকাকে বোঝানো হতো এবং মসজিদকে আল-জামি আল-আকসা বলা হতো। প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী খ্রিস্টপূর্ব নয়শত সাতান্ন সালে বাদশাহ সলোমন বা সুলাইমান (আ.) নির্মাণ করেন এই ‘প্রথম মসজিদ’ বা বায়তুল মুকাদ্দাস নামে চিরচেনা মসজিদ আল-আকসা। খ্রিস্টপূর্ব পাঁচশত ছিয়াল্লিশ সালে ব্যবিলনীয়রা ধ্বংস করে দেয় মসজিদ কাঠামোটি। পারস্য অঞ্চলের গভর্নর জেরুবাবেলের পৃষ্ঠপোষকতায় খ্রিস্টপূর্ব পাঁচশত ষোল" সালে নির্মিত হয় দ্বিতীয়বার এই মসজিদ সেই আগের জায়গায়ই। মুসলিমদের প্রথম কিবলা এই মসজিদ আল-আকসা ইহুদিদেরও প্রার্থনার কেন্দ্রস্থল। এই মসজিদ আল-আকসার দিকে ফিরেই মুসলিমরা আগে নামাজ আদায় করতেন মদিনায় হিজরতের সতের তম মাস পর্যন্ত। মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী মসজিদ আল-আকসার প্রথম নির্মাণের আগেই দাঁড়ানো অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন সুলাইমান আলাইহিসসালাম। অন্যদিকে ইহুদিদের কিতাবগুলোতে এই আল-আকসা নিয়ে প্রচুর বিবরণ রয়েছে। কিন্তু দুঃখের ব্যাপার, সত্তুর খ্রিস্টাব্দে রোমানরাও ধ্বংস করে দিয়েছিল এই আল-আকসা। ইতিহাসের ঘাত-প্রতিঘাতে বহুবার ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে এই অন্যতম পবিত্র স্থানটি। বর্তমানেও ঝড় বয়ে যাচ্ছে। ইতিহাসের হাজারো সাক্ষী এই মসজিদ আল-আকসা।

লোকমান হাকীমের জীবনী জানতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন।


Copyright @ 2013 QASAS UL ANBIYA.